Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

Title
‪‎এশিয়ার‬ বৃহত্তম আধুনিক কারাগার কেরানীগঞ্জে , উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আজ
Details

★ সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে পদ্মা, যমুনা, করতোয়া, বকুল, শাপলা, চম্পাকলিরা। নদীর সঙ্গে, ফুলের সঙ্গে মিলিয়ে নাম পেয়েছে কেরানীগঞ্জের নতুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভবনগুলো। ১০ এপ্রিল রোববার রাজধানীর অদূরে কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঢাকা থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-মাওয়া সড়কের দক্ষিণে কেরানীগঞ্জে ৪ হাজার ৫৯০ বন্দি ধারণক্ষমতার নতুন এ কারাগার নির্মিত হয়েছে ১৯৪ দশমিক ৪১ একর জমির ওপর। ব্যয় ধরা হয়েছে ৪০৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। নতুন এ কারাগারের নির্মাণ শুরু হয় ২০০৭ সালে।
নতুন কারাগার উদ্বোধন উপলক্ষে শুক্রবার দুপুরে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন এসব তথ্য জানান।
কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র জানায়, ২ হাজার ৮২৬ বন্দি ধারণক্ষমতার পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মিত হয়েছিল ১৭৮৮ সালে। সোয়া ২শ বছর আগে স্থাপিত পুরান ঢাকার এ কারাগারে বর্তমানে বন্দির সংখ্যা অনুমোদিত সীমার প্রায় তিনগুণ বেশি।
আইজি প্রিজন জানান, নতুন কারগারের পেরিমিটার দেয়ালের ভেতরে তিন হাজার বিচারাধীন বন্দি ওয়ার্ড রয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত বন্দি ওয়ার্ড রয়েছে এক হাজার। বিপদজনক বন্দি সেল রয়েছে ৪০০। কিশোর বন্দি ভবন রয়েছে একটি, যাতে একশ কিশোর বন্দি থাকার ব্যবস্থা আছে। এছাড়া একটি শ্রেণিপ্রাপ্ত বন্দি ভবন রয়েছে, যাতে থাকার ব্যবস্থা আছে ৬০ (ভিআইপি) বন্দির। এমআই ইউনিটে থাকতে পারবে ২০ বন্দি।
কারাগারের ভেতরে একটি অত্যাধুনিক ফাঁসির মঞ্চ রয়েছে। ওই মঞ্চে এক সঙ্গে দুই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির ফাঁসি কার্যকর করা যাবে।
এছাড়া একটি জেলা স্কুল অ্যান্ড লাইব্রেরি, আটটি রান্না ঘর, ১৬টি ডে-টাইম বাথিং, একটি ওয়ার্ক সেল, একটি সেলুন, একটি আটার কল, একটি কেইস টেবিল, ১০টি পানির রিজার্ভার, ১০টি পাম্প হাউজ রয়েছে। পুরো কমপ্লেক্সের নিরাপত্তা নিশ্চিতে থাকছে ৪৮টি সিসিটিভি, ইলেকট্রনিক বারবেড ওয়ার ফেন্সিং।
সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন জানান, পেরিমিটার দেয়ালের বাইরে ১২৩০ দশমিক ৯৬ আয়তনের একটি চার তলা ভীতে ২ তলার প্রশাসনিক ভবন রয়েছে। সাক্ষাৎকার ভবন রয়েছে একটি। এছাড়া বিভিন্ন আয়তনের ৯৮টি আবাসিক কোয়ার্টার ইউনিট রয়েছে। ৩৮৪ কারারক্ষী থাকার জন্য রয়েছে ব্যারাক।
৪০০ কেভিএ সম্পন্ন একটি জেনারেটর রয়েছে। গোডাউন রয়েছে তিনটি। সাবস্টেশন ভবন একটি। অবজারভেশন টাওয়ার চারটি, ২ সেন্ট্রি বক্স ও একটি মসজিদও রয়েছে নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারে।
নতুন এ কারাগারে ২৭০ বন্দি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন নারী কেন্দ্রীয় কারাগারের কাজও চলছে। পুরুষ কারাগার-১ এর সমপরিমাণ ধারণক্ষমতা সস্পন্ন পুরুষ কারাগার-২ নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে। প্রকল্পটিতে ব্যয় হয়েছে ২৭৮ দশমিক ১৫ কোটি টাকা। এতে একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান আইজি প্রিজন।
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ভবনের ৮৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। একদিনেই সব কারাবন্দিদের স্থানান্তরের চিন্তা থাকলেও তা সম্ভব নয়। কারণ এক ভ্যানে ৫০ করে স্থানান্তর করা হলে ৮ হাজার কারাবন্দির জন্য ১৬০টি ভ্যান প্রয়োজন। কিন্তু এতো সংখ্যক ভ্যান আমাদের নেই। তাছাড়া নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিতের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সরকারি ছুটির দিনগুলোতে কারাবন্দিদের স্থানান্তরের বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে।’
পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দীন রোডে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে নতুন কারাগারের দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। নতুন কারাগার উদ্বোধনের পরপরই পুরনো কারাগার থেকে অতিরিক্ত বন্দিদের সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘কেরানীগঞ্জের নতুন কারাগারে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হবে। কারারক্ষীদের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার জন্য একটি স্কুল নির্মাণ করা হবে। বন্দিরা যাতে মোবাইল ফোন ও মাদক ব্যবহার করতে না পারে সে জন্য জ্যামার স্থাপন করা হবে। তবে আমরা যা শুনেছি কেরানীগঞ্জের ওই এলাকায় বেশি বেশি লোডশেডিং হয়। আর লোডশেডিং হলে জ্যামার কাজ করে না। সে সময়ও কড়া নজরদারি করা হবে। এজন্য একটি পার্সোনাল স্ক্যানার স্থাপনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।’

Images
Attachments